বুধবার, ২৯ মে ২০২৪, ০২:০৬ অপরাহ্ন

হজ পরবর্তী জীবন

স্বদেশ ডেস্ক:

মুমিনের জীবনে হজের প্রেমময় সফর নিঃসন্দেহে তাৎপর্যময়। বাইতুল্লাহর মেহমান হতে পারা সত্যিই পরম সৌভাগ্যের। যদি হাজীগণ পুণ্যময় এই সফরের মাধ্যমে স্থায়ী কল্যাণ অর্জন করতে চান, তা হলে প্রত্যেক হাজীকে হজ থেকে ফিরে এসে হজের প্রকৃত শিক্ষাকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অনুশীলন করতে হবে।
চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে নিজেকে বদলানোর; যাতে নিষ্পাপ হয়ে ফিরে আসা পুণ্যময় দেহ ও আত্মায় গুনাহের কালিমা আর না লাগে।
বাইতুল্লাহ জিয়ারতের মাধ্যমে পুণ্যময় এক জীবনের শপথ নিতে হবে। শপথ নিতে হবে ধৈর্য্য, উদারতা ও হালাল রুজির। আরাফার সেই খোলা আকাশের নিচে অবস্থানের মাধ্যমে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হতে হবে, বিদায় হজে রাসূলে আরাবি সা:-এর দেয়া ভাষণের মর্মবাণীগুলো বাস্তবায়ন করার। অন্তর থেকে মুছে ফেলতে হবে দাম্ভিকতার কালিমা।

কঙ্কর নিক্ষেপের মাধ্যমে দৃঢ় সঙ্কল্প গ্রহণ করতে হবে, বিতাড়িত শয়তানের সব প্রকার ধোঁকা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার। কোরবানির মাধ্যমে শিক্ষা নিতে হবে নিজের পশুত্বকে বিসর্জন দেয়ার।
মদিনায় গিয়ে প্রিয়নবী সা:-এর রওজা মুবারক জিয়ারতের মাধ্যমে ব্যক্তি, সমাজ, অর্থনীতি, রাষ্ট্র তথা ইহজগতে যাপিত জীবনের প্রতিটি স্তরে রাসূল সা:-এর আদর্শ বাস্তবায়নের ইস্পাতকঠিন দৃঢ় অঙ্গীকার করতে হবে।
তবে ভিষণ আক্ষেপের বিষয় হলো- হজ থেকে ফিরে এসে অনেক হাজী সেই শপথ, সঙ্কল্প, ওয়াদা ও অঙ্গীকারের কথা বেমালুম ভুলে যান। শয়তানের ধোঁকায় এবং পর্থিব দুনিয়ার মোহে হাজারও গুনাহের জালে জড়িয়ে পড়েন।
পক্ষান্তরে অনেক হাজী এমনও রয়েছেন যাদের হজ কবুল হওয়ার ব্যাপারে তাদের হজ-পরবর্তী জীবন সাক্ষ্য দেয়। তারা ওই সব হাজী যারা হজের পরে কাজকর্মে, আমল-আখলাকে, চিন্তা-চেতনায় পরিশুদ্ধি অর্জন করেন বা আগের চেয়ে উন্নতি লাভ করেন, তারাই প্রকৃত হাজী। যাদের হজ কবুল হয়, তাদের জীবনের মোড় ও কর্মের অভিযাত্রা ঘুরে যায়। ভবিষ্যতে গুনাহ থেকে বিরত থাকার আগ্রহ বাড়ে। আল্লাহর আনুগত্যের প্রতি মানুষ যত্নবান হয়।

‘হজ করার পর যার জীবনে কাক্সিক্ষত পরিবর্তন আসেনি, তার হজ কবুল হওয়ার বিষয়টি সন্দেহমুক্ত নয় (আপকে মাসায়েল, খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা-২৫)’।
হজ সম্পাদন করাই জীবনের সার্থকতা নয়; জীবনব্যাপী হজ এবং হজের আদর্শ ধারণ করাই আসল সার্থকতা।
রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘হজ ও ওমরাহের জন্য গমনকারী ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালার বিশেষ মেহমান। তিনি দোয়া করলে আল্লাহ তা কবুল করেন। কবুল হজের মাধ্যমে মানুষ নিষ্পাপ হয়ে যায়’ (মুসলিম, তিরমিজি, মিশকাত)। যার হজ কবুল হবে, হজের পরও ৪০ দিন পর্যন্ত তার দোয়া কবুল হবে; এমনকি যত দিন তিনি গুনাহে লিপ্ত না হবেন, তত দিন তার সব দোয়া কবুল হতেই থাকবে।

আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহর হজ পালনকারী সব হাজীকে কুরআন-সুন্নাহভিত্তিক বাকি জীবন অতিবাহিত করার তাওফিক দান করুন। ভালো কাজে যুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। আমীন।

  • আহসানুল ইসলাম রাকিব

শিক্ষার্থী , জামিয়া হোসাইনিয়া ইসলামিয়া আরজাবাদ

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877